Hardware

গ্রাফিক্স কার্ডের টুকিটাকি


গ্রাফিক্স কার্ড কয়েক নামে পরিচিত, যেমন - ভিডিও কার্ড, ডিসপ্লে কার্ড, গ্রাফিক্স এক্সেলারেটর কার্ড৷ গ্রাফিক্স কার্ডের কাজ কোনো ছবিকে জেনারেট করা এবং তা আউটপুট ইমেজ আকারে মনিটরে প্রদর্শন করা৷ গ্রাফিক্স কার্ড যে শুধু গেমারদের জন্য বেশি প্রয়োজনীয় তা ঠিক নয়৷ গ্রাফিক্স ডিজাইনিংয়ের ক্ষেত্রে, হাই ডেফিনেশন ভিডিও দেখার জন্য এবং ভিডিও কোয়ালিটি ভালো করার জন্যও গ্রাফিক্স কার্ডের ব্যবহার হয়৷ এমনকি গ্রাফিক্স কার্ড উইন্ডোজ ভিসতার কাজ করার দক্ষতা ও সৌন্দর্যবর্ধনে খুবই সহায়ক৷ নতুন গ্রাফিক্স কার্ডগুলো আরো কিছু চমত্কার সুযোগসুবিধা দেয়, যেমন- ভিডিও ক্যাপচারিং, টিভি টিউনার এডাপ্টার, MPEG-2 ও MPEG -4 ডিকোডিং৷ এছাড়াও ফায়ারওয়্যার, মাউস, লাইট পেন, জয়স্টিক যুক্ত করার পোর্ট এমনকি দুইটি মনিটরে কানেকশন দেয়ার সুবিধাও দিয়ে থাকে এসব গ্রাফিক্স কার্ড৷

গ্রাফিক্স কার্ডের কার্যপদ্ধতি 

আমরা যে ইমেজ মনিটরে দেখি তা খুবই ছোট ছোট কণার সমন্বয়ে গঠিত যা পিক্সেল নামে পরিচিত৷ যেকোনো একটি সাধারণ রেজ্যুলেশন সেটিংয়ে এক মিলিয়নেরও বেশি পিক্সেল থাকে এবং কমপিউটার প্রতিটি পিক্সেল অনুযায়ী ইমেজটি সৃষ্টি করে থাকে৷ এই কাজটি সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজন হয় একটি অনুবাদক বা ট্রান্সলেটরের৷ অনুবাদকের কাজ হচ্ছে সিপিইউ থেকে বাইনারি ডাটা নিয়ে তা ছবিতে রূপান্তর করা যাতে আমরা তা দেখতে পারি৷ অনুবাদকের এই কাজটি সম্পন্ন করে গ্রাফিক্স কার্ড৷ গ্রাফিক্স কার্ডের কাজ করার প্রক্রিয়া জটিল কিন্তু এর অন্যান্য বিষয় এবং অংশগুলো সহজেই বোধোগম্য৷

গ্রাফিক্স কার্ডের অংশ 

গ্রাফিক্স কার্ডে একটি প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ডের উপরে এর প্রয়োজনীয় অংশগুলো বসানো থাকে৷ এগুলো হচ্ছে :

১. গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট (GPU) :

একটি গ্রাফিক্স কার্ডের গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট হচ্ছে একটি গ্রাফিক্স মাইক্রোপ্রসেসর, যা ফ্লোটিং পয়েন্ট গণনা করে৷ এটি 3D গ্রাফিক্স রেন্ডারিংয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ জিপিইউয়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর ক্লক রেট৷ সাধারণত বর্তমানের গ্রাফিক্স কার্ডগুলোর ক্লক রেট ২৫০ মে. হা. থেকে ১২০০ মে.হা. পর্যন্ত হয়ে থাকে৷

২.ভিডিও মেমরি : 

সাধারণত যখন গ্রাফিক্স কার্ড মাদারবোর্ডের সাথে ইন্ট্রিগ্রেটেড থাকে তখন ৠাম থেকে মেমরি শেয়ার করার প্রয়োজন পরে, কিন্তু যদি মাদারবোর্ডের সাথে ইন্ট্রিগ্রেটেড না হয় তবে গ্রাফিক্স কার্ডের নিজস্ব ভিডিও মেমরি ব্যবহার করে থাকে৷ যখন জিপিইউ কোনো ছবি তৈরি করে তখন ছবি তৈরির প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো (যেমন- প্রতিটি পিক্সেলের মান, রং এবং স্ক্রিনে পিক্সেলের অবস্থান ইত্যাদি) কোথাও না কোথাও রাখার প্রয়োজন পড়ে৷ তখন ভিডিও মেমরির একটি অংশ ফ্রেম বাফার হিসেবে কাজ করে৷ এর মানে হলো মূল ছবিটি স্ক্রিনে প্রদর্শিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সব তথ্য এটি ধারণ করে৷ ২০০৩ সাল পর্যন্ত গ্রাফিক্স কার্ডগুলোর ভিডিও মেমরি ডিডিআর প্রযুক্তিতে বানানো হতো৷ বর্তমানে ডিডিআর-২, জিডিডিআর-৩, এমনকি জিডিডিআর-৪ প্রযুক্তিতেও বানানো হচ্ছে৷ এর ফলে গ্রাফিক্স কার্ডের ক্লক রেটের মান অনেক গুণে বেড়েছে৷



নিচে বিভিন্ন মেমরির ক্লক রেট ও ব্যান্ডউইডথ উল্লেখ করা হলো পার্থক্য বুঝানোর সুবিধার্থে :

 ৩. ভিডিও বায়োস : 

ভিডিও বায়োস ফার্মওয়্যার চিপ নামেও পরিচিত৷ এই চিপ মূল প্রোগ্রাম ধারণ করে যা ভিডিও কার্ডের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে এবং কমপিউটার ও সফটওয়্যারের মাঝে যোগসূত্র রক্ষা করে৷

 ৪. RAMDAC : 

RAMDAC (Random Access memory Digital to Anolog Converter) দিয়ে ৠানডম এক্সেস মেমরিকে ডিজিটাল থেকে এনালগে রূপান্তর করাকে বুঝায়৷ এটি গ্রাফিক্স কার্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ৷ সিআরটি ডিসপ্লে মনিটরের ক্ষেত্রে রিফ্রেশ রেট ৭৫ হার্টজ হলে তা ভালো হয় কিন্তু যদি তা ৬০ হার্টজ হয় তবে স্ক্রিন হাল্কা কাঁপবে৷ RAMDAC এই রিফ্রেশ রেট নিয়ে কাজ করে৷ LCD ডিসপ্লে মনিটরে RAMDAC অতটা জরুরি নয়৷

 ৫. আউটপুট : 

কমপিউটারের ডিসপ্লের সাথে ভিডিও কার্ডের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সংযোগ ব্যবস্থা হচ্ছে-

SVGA :
এটি সাধারণ সিআরটি মনিটর সংযোগ করার কাজে লাগে৷

DVI :
ডিজিটাল ডিসপ্লেভিত্তিক অর্থাৎ এলসিডি, প্লাজমা স্ক্রিন ও প্রজেক্টর ইত্যাদি সংযোগ দিতে কাজে লাগে৷

S-Video :
এটি দিয়ে ডিভিডি প্লেয়ার, ভিডিও রেকর্ডিং ডিভাইস, ভিডিও গেম কন্সোল ইত্যাদি সংযোগের কাজে ব্যবহার করা হয়৷ এছাড়াও আরো কিছু কানেকশন পোর্ট হলো- কম্পোজিট ভিডিও, কম্পোনেট ভিডিও, এইচডিএমআই, ডিসপ্লে পোর্ট ইত্যাদি৷

৬. মাদারবোর্ড ইন্টারফেস : 
গ্রাফিক্স কার্ড মাদারবোর্ডের একটি টের সাথে লাগানো থাকে, এই স্লট কয়েক প্রকার হতে পারে৷ যেমন- ISA, MCA, EISA, VESA, PCI, AGP, PCI Express ইত্যাদি৷ শেষ তিনটি বহুল ব্যবহৃত ট বা বাস৷ নিচে ছকে এদের পার্থক্য দেখা হলো :

৭. তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা :

গ্রাফিক্স কার্ডের তাপমাত্রা বেড়ে যায় যখন সেটি কাজ করে৷ তাই গ্রাফিক্স কার্ডের কাজ চলাকালীন তাপমাত্রা কমানোর জন্য কিছু ঠাণ্ডাকরণ যন্ত্র বা কুলিং ডিভাইস ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ এগুলো হলো :

হিট সিঙ্ক :

কপার বা অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি হিট সিঙ্কটি জিপিইউয়ের তাপমাত্রা কমায় কোনো প্রকার শব্দ না করে৷

কুলিং ফ্যান : 

গ্রাফিক্স কার্ডের ওপরে ছোট আকারের ফ্যান ব্যবহার করা হয় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য৷ এটি হিট সিঙ্কের চেয়ে বেশি কার্যকর কিন্তু হাল্কা শব্দ করে৷

ওয়াটার ব্লক বা লিকুইড কুলিং :

এক্ষেত্রে জিপিইউ ঠাণ্ডা করতে হিট সিঙ্কের পাশাপাশি তরল পদার্থ ব্যবহার করা হয়৷ এটি সবচেয়ে বেশি কার্যকর গ্রাফিক্স কার্ড ঠাণ্ডা করার ক্ষেত্রে৷

৮. পাওয়ার সাপ্লাই : 

গ্রাফিক্স কার্ড যত বেশি শক্তিশালী হবে তার তত বেশি পাওয়ারের প্রয়োজন হবে৷ পিসিআই এক্সপ্রেস পোর্টগুলো সাধারণত ১৫০ ওয়াট পাওয়ার প্রদান করে থাকে৷ নতুন গ্রাফিক্স কার্ডে পাওয়ার কনজাম্পশন টেকনোলজি ব্যবহারের ফলে তা কম বিদ্যুৎ খরচ করে৷

গ্রাফিক্স অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস 

দুইটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রাফিক্স অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস হচ্ছে- মাইক্রোসফটের ডাইরেক্ট থ্রিডি এবং সিলিকন গ্রাফিক্সের ওপেনজিএল৷ বেশিরভাগ উইন্ডোজভিত্তিক গেমগুলো ডাইরেক্ট থ্রিডি-এর ডাইরেক্টএক্স সাপোর্ট করে৷ ডাইরেক্টএক্সের নতুন ভার্সন হচ্ছে ডাইরেক্টএক্স ১০৷ বাজারের নতুন গ্রাফিক্স কার্ডগুলো ডাইরেক্টএক্স ৯.০সি ও ডাইরেক্টএক্স ১০ সাপোর্ট করে৷

ওপেনজিএল হচ্ছে ফ্রি, ওপেন, মাল্টি-ল্যাঙ্গুয়েজ ও মাল্টি-প্লাটফরম অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস৷ এটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, সায়েন্টিফিক ভিজ্যুয়ালাইজেশন, ফ্লাইট সিম্যুলেশন, কিছু গেম এবং লিনআক্স ও ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করা হয়৷ এর সর্বশেষ ভার্সন হচ্ছে ওপেনজিএল ২.১৷

গ্রাফিক্স টেকনিক্স

গ্রাফিক্স কার্ডগুলোর গ্রাফিক্স আউটপুট কোয়ালিটি বাড়ানোর জন্য কিছু ইফেক্ট ব্যবহার করা হয়৷ এই টেকনিক বা ইফেক্টগুলো নিচে দেয়া হলো :

এন্টি-এলাইসিং, শেডার, হাই ডাইনামিক রেঞ্জ রেন্ডারিং, টেক্সটচার ম্যাপিং, মোশন ব্লার, ডেপথ অফ ফিল্ড, লেন্স ফ্লেয়ার, ফ্রেসনেল ইফেক্ট, এনিসোট্রপিক ফিল্টারিং, ওভারক্লকিং৷

গ্রাফিক্স কার্ডের গতি সরাসরি এর হার্ডওয়্যারগুলোর ওপর নির্ভরশীল৷ যেসব হার্ডওয়্যার গ্রাফিক্স কার্ডের গতির ওপর প্রভাব বিস্তার করে সেগুলোর নাম ও তাদের পরিমাপের একক নিম্নরূপ :

জিপিইউ ক্লক স্পিড (মেগাহার্টজ),মেমরি বাসের আকার (বিটস),মেমরির পরিমাণ (মেগাবাইট),মেমরি ক্লক রেট (মেগাহার্টজ),মেমরি ব্যান্ডউইডথ (গিগাবাইট/সেকেন্ড), Ramdac -এর গতি (মেগাহার্টজ)৷

ওভারক্লকিং : 

গ্রাফিক্স কার্ডের পারফরমেন্স বাড়ানোর জন্য ম্যানুয়ালি এর ক্লক স্পিডের মান বাড়িয়ে দেয়া যায়, একে ওভারক্লকিং বলা হয়৷ মেমরি ওভারক্লকিংয়ের ফলে পারফরমেন্সের উন্নতি হয় ঠিকই কিন্তু এর ফলে জিপিইউর ওপর চাপ পড়ে যা গ্রাফিক্স কার্ডের জন্য ক্ষতিকর৷ ওভার হিটিংয়ের ফলে গ্রাফিক্স কার্ড নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷

 এন্টিএলাইসিং : 

ফুল স্কিন এন্টিএলাইসিং বা FSAA দিয়ে ত্রিমাত্রিক কোনো বস্তুর অসমান ধার বা কোণাগুলোকে মসৃণ করা হয়৷ ইদানিং উচ্চমানের ভিডিও গেমগুলোতে 2X থেকে 8X পর্যন্ত এন্টিএলাইসিং করার অপশন থাকে যাতে গেমের গ্রাফিক্স মসৃণ ও বাস্তব মনে হয়৷ তবে এন্টিএলাইসিং চালু করলে গেমের গতির ওপর সামান্য প্রভাব পড়বে, যদি ভিডিও মেমরি কম হয়৷ গ্রাফিক্স কার্ড কেনার আগে যা যা দেখা উচিত

চিপসেট : 

বাজারে দুই ধরনের চিপসেটের গ্রাফিক্স কার্ড পাওয়া যায়৷ তার একটি হলো এনভিডিয়া ও আরেকটি এটিআই৷ কিছু গেম কোম্পানি চিপসেটের ওপর ভিত্তি করে গেম রিলিজ করে৷ এক চিপসেট সাপোর্টেড গেম অন্য চিপসেটে ভালো চলে না৷ তাই চিপসেট নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷

কানেকশন পোর্ট : 

গ্রাফিক্স কার্ড পোর্ট হিসেবে বহুল ব্যবহৃত দুইটি পোর্টের একটি এজিপি, আরেকটি পিসিআই এক্সপ্রেস৷ এজিপি-এর ডাটা ট্রান্সফারের গতি 8X কিন্তু পিসিআই এক্সপেসের 16X, যা এজিপি-এর দ্বিগুণ৷ তাই দাম বেশি হলেও পিসিআই এক্সপ্রেস ভালো৷ মেমরি : গেমের রেজ্যুলেশন বাড়িয়ে খেলতে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য বেশি মেমরিযুক্ত ভিডিও কার্ড কেনা উচিত৷ ১২৮ মেগাবাইট মেমরির গ্রাফিক্স কার্ডগুলো দিয়ে এখনকার প্রায় সব গেমই ভালো চলে৷ কিন্তু যারা আরো ভালো পারফরমেন্স আশা করেন তারা ২৫৬ বা ৫১২ মেগাবাইট মেমরির গ্রাফিক্স কার্ডের দিকে আগ্রহ দেখাতে পারেন৷

 ফ্রেম রেট : 

ফ্রেম রেট হচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে সিস্টেম কতটি ডিসপ্লে দেখাতে পারে তার হিসেব৷ সব গেমের ফ্রেম রেট এক নয়৷ মানুষের চোখের ফ্রেম রেট হলো প্রতি সেকেন্ডে ২৫টি ফ্রেম৷ আর ভালো মানের একটি অ্যাকশন গেমের ফ্রেম রেট হলো ৬০টি ফ্রেম প্রতি সেকেন্ডে৷ ফ্রেম রেটের মান যত বেশি হবে গেমের গ্রাফিক্স কোয়ালিটি তত সুন্দর হবে৷

ডাইরেক্টএক্স :

গেম চালানোর জন্য এটি অপরিহার্য৷ বাজারের বেশিরভাগ গ্রাফিক্স কার্ডই ডাইরেক্টএক্স ৯.০সি সাপোর্টেড৷ ডাইরেক্টএক্স ১০ সাপোর্টেড গ্রাফিক্স কার্ডগুলোর দাম অনেক বেশি৷ কয়েকটি ডাইরেক্টএক্স ১০ সাপোর্টেড গ্রাফিক্স কার্ড হলো- -এর GeForce 8800 series, 8500GT এবং ATI-Fr Radeon HD2900XT ও HD2400 series ইত্যাদি৷

 ডবল ডিসপ্লে পোর্ট : 

নতুন কিছু গ্রাফিক্স কার্ডের ডিভিআই আউটপুটের পাশাপাশি ভিজিএ পোর্টও দেয়া থাকে৷ যার ফলে পুরনো মডেলের মনিটর সংযোগ দেয়া যায় এবং একসাথে দুটি মনিটরও সংযোগ দেয়া যায়৷

 ইনহ্যান্স ভিডিও প্লেব্যাক : 

নতুন গ্রাফিক্স কার্ডগুলোতে ভিডিও প্লেব্যাক বর্ধিতকরণের জন্য কিছু সুবিধা রয়েছে৷ ATI -এর Avivo এবং nVIDIA -এর Pure Video ডিভিডি প্লেব্যাকের পারফরমেন্স বাড়াতে সাহায্য করে৷

এইচডিসিপি : 

এইচডি ডিভিডি (হাইডেফিনেশনডিজিটালভিডিওডিস্ক) বা ব্লু রে ডিস্ক চালানোর জন্য এবং এর উচ্চমান অক্ষুণ্ন রাখতে এটি ব্যবহার হয়৷

টিভি টিউনার :

পিসিতে টিভি দেখা ও পছন্দমতো অনুষ্ঠান কেটে রাখার জন্য কিছু কিছু ভিডিও কার্ড টিভি টিউনার ব্যবহার করে থাকে৷ এই কার্ডগুলো টিভি কার্ডের বিকল্প৷

ডুয়াল কার্ড সাপোর্ট : 

দুটি ভিডিও কার্ড একটি মাদারবোর্ডের সাথে যুক্ত করার জন্য মাদারবোর্ডটি ভগঅঊঅই-এর nVIDIA-এর SLI (Scalable Link Interface)অথবা ATI -এর Crossfire dual board technology সমর্থন করে কিনা দেখে নিতে হবে৷

কোয়াড সিএলআই : 

এটি nVIDIA -এর একটি টেকনোলজি যা ৪টি গ্রাফিক্স চিপকে একত্র করতে পারে৷ এর ফলে 1920x1200 থেকে 2560x1600 রেজ্যুলেশনে গেম খেলা সম্ভব৷ যারা পিসিতে ওয়ার্ড প্রসেসিং, ওয়েব ব্রাউজিং, ই-মেইল ইত্যাদি কাজ করেন তাদের জন্য মাদারবোর্ডের বিল্ট ইন গ্রাফিক্স কার্ডই যথেষ্ট৷ সিনেমা দেখা ও ছোটখাটো গেম খেলা যাদের অভ্যাস তাদের জন্য মধ্যম মানের গ্রাফিক্স কার্ড হলেই যথেষ্ট৷ কিন্তু যারা হার্ডকোর গেমার এবং গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করেন তাদের জন্য প্রয়োজন খুব ভালো মানের গ্রাফিক্স কার্ড৷

প্রকার ক্লক রেট ব্যান্ডউইডথ (মে.হা.) (গি.বা./সে.)) ডিডিআর ১৬৬-৯৫০ ১.২-৩০.৪ ডিডিআর-২ ৫৩৩-১০০০ ৮.৫-১৬ জিডিডিআর-৩ ৭০০-১৮০০ ৫.৬-৫৪.৪ জিডিডিআর-৪ ১৬০০-২৪০০ ৬৪-১৫৬.৬ বাস বা ট ডাটা রেঞ্জ (বিটস) ক্লক রেট (মে.হা.) পিসিআই ৩১-৬৪ ৩৩-১০০ এজিপি ৩২ ৬৬-৫৩৩ পিসিআই এক্সপ্রেস ১-১৬ ২৫০০-৫০০০

তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
এর দ্বারা পোস্ট করা ictclb এই সময়ে ৬:২৪ pm 0 মন্তব্য(সমূহ)
// 

হার্ড ডিস্ক মেইনটেনেন্স – পর্ব ৩

~স্বপ্নজয়~

হার্ড ডিস্ক মেইনটেনেন্স – পর্ব ২

প্রতিবার পিসি চালু হবার পর হার্ড ডিস্কে নতুন নতুন ফাইল তৈরী হয় আর পিসিতে থাকা ফাইলগুলোতে কিছু পরিবর্তন আসে। সে কারনে কোন কোন পুরানো ফাইলের আকার বেড়ে যায়, তখন কম্পিউটার সেই ফাইলটির বাড়তি অংশটুকু হার্ড ডিস্কের ফাঁকা যায়গায় লিখে রাখে। লিখতে গিয়ে পাতা শেষ হয়ে গেলে আমরা যেমন পরের পাতায় চলে যাই, ব্যাপারটা ঠিক তেমনই। সে কারনে পরের বার পিসি সেই বড় হয়ে যাওয়া ফাইলটা নিয়ে কাজ করতে গেলে এর বাকি অংশ গুলো খুঁজতে বাড়তি সময় ব্যায় করে, ফলাফল – আগের তুলনায় পিসি স্লো হয়ে যায় একটু। এভাবে একটু একটু করে স্লো হতে হতে এক সময় মনে হয় পিসি অনেকটাই স্লো হয়ে গেছে। এই সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য ডিস্ক ডিফ্রাগমেন্ট টুলটার আগমন। ডিফ্রাগমেন্টের সময় কম্পিউটার ওই ফাইলটার বাড়তি টুকরো গুলো খুজে এনে আগের ফাইলের সাথে জোড়া দিয়ে দেয়, তখন কম্পিউটারকে এক একটা ফাইলের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা টুকরা গুলো হার্ড ডিস্কের আনাচে কানাচে খুজে বেড়াতে হয়না, ফলে সময় বাঁচে। কম্পিউটার আবার আগের গতী ফিরে পায়।

ডিস্ক ডিফ্রাগমেন্ট টুল ব্যাবহারঃ

১) ডেস্কটপ অথবা অল প্রোগ্রামস থেকে মাই কম্পিউটারে ক্লিক করতে হবে। তখন যে উইন্ডোটি আসবে তা অনেকটা নীচের ছবিটির মত। আপনার হার্ড ডিস্কে পার্টিশন বেশি হলে C ড্রাইভের পর D,E,F … এভাবে আরও অনেক ড্রাইভ দেখাবে। কিন্তু আমরা শুধু C ড্রাইভটি নিয়ে কাজ করবো।

২) C ড্রাইভে রাইট ক্লিক করলে যে মেনুটি আসবে তার সব চাইতে নীচে থাকবে Properties. ওখানে ক্লিক করুন, নীচের ছবির মত একটি উইন্ডো আসবে।

৩) General ট্যাবের পাশের ট্যাবটি হচ্ছে Tools ট্যাব, ওখানে ক্লিক করে Defragment Now বাটনে ক্লিক করুন।

৪) নীচের ছবির মত একটু উইন্ডো আসবে, সেখান থেকে Analyse বা Defragment বাটনে ক্লিক করুন, C ড্রাইভ কত খানি ফ্র্যাগমেন্টেড সেটা দেখাবে, আর কম্পিউটার নিজে থেকেই জানিয়ে দেবে যে ড্রাইভটি ডিফ্র্যাগমেন্ট করতে হবে না কি।

৫) Defragmet বাটনে ক্লিক করুন, নীচের ছবির মত উইন্ডো দেখতে পাবেন। এখানে উপরে নীচে দুটি ছবিতে লাল, সবুজ ও নীল রঙ দিয়ে দেখানো থাকবে হার্ড ডিস্কের বর্তমান ও ডিফ্র্যাগমেন্টের পরের অবস্থা। লাল রঙের দাগ গুলো হচ্ছে ফ্র্যাগমেন্টেড ফাইল, মানে একটি ফাইলের ভাঙ্গা অংশ। ডিফ্র্যাগমেন্ট শেষ হলে এই লাল দাগ গুলো অনেক কমে যাবে। বেশীর ভাগই নীল হয়ে যাবে, অল্প কিছু লাল থাকতেও পারে, ওতে কোন সমস্যা নেই।

৬) প্রথম বার ডিফ্র্যাগমেন্ট করতে ঘন্টা খানেক সময় লাগতে পারে। ডিফ্র্যাগমেন্ট শেষ হলে পিসি রিষ্টার্ট করুন। দেখবেন আগের চাইতে ভাল স্পিড পাচ্ছেন, প্রোগ্রাম দ্রুত লোড হচ্ছে।

দুটি প্রয়োজনীয় সফটওয়ারঃ

ইউনি-ব্লু স্পিড আপ মাই পিসিঃ
কম্পিউটারের বেসিক মেইনটেনেন্স টুল গুলোর মধ্যে এই টুলটি আমার পছন্দ। এই সফটওয়ারটি এক ক্লিকেই আপনার পিসির অনেক অপ্রয়োজনীয় ফাইল মুছে হার্ড ডিস্ককে পরিচ্ছন্য রাখবে।

সফটওয়ারটি ইন্সটল করে Start Scan বাটনে ক্লিক করুন, নিজে থেকেই সে অপ্রয়োজনীয় ফাইল খুজে বের করবে। খুজে পাবার পর নীচের উইন্ডোটি দেখাবে।

এই উইন্ডোর নীচের ডানদিকে Optimise all বাটনে ক্লিক করুন।

সাবধানতাঃ যারা ইয়াহু চ্যাটলগ সেইভ করেন, তারা ইয়াহু ফোল্ডার থেকে আপনার প্রোফাইলটি অন্য যায়গায় কপি করে সেইভ করে রাখুন, নতুবা এই সফটওয়ার সে গুলো ডিলিট করে দেবে।

ইউনি-ব্লু রেজিস্ট্রি বুষ্টার

ইউনি-ব্লু’র আরও একটি দরকারী সফটওয়ার। কম্পিউটারের রেজিস্ট্রি হচ্ছে বই এর সূচিপত্রের মত একটি জিনিস। কম্পিউটারের কোন ফাইল কোথায় আছে, সেটা রেজিস্ট্রিতে লেখা থাকে। যেহেতু কম্পিউটার প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ফাইল তৈরী করে, তাই রেজিস্ট্রিতে নতুন নতুন এন্ট্রি তৈরী হয়, কিন্তু সেই ফাইলগুলো ডিলিট বা মুভ করলেও কিছু কিছু এন্ট্রি থেকে যায়, ফলে রেজিস্ট্রিতে থাকা এন্ট্রির সংখ্যা বাড়তেই থাকে। আর কপিউটার চলার সময় সেই এন্ট্রি গুলো ধরে ফাইল খুজতে থাকে, কোন ফাইল খুজে না পেলে আবার গোটা রেজিস্ট্রি খুজে দেখে সেই ফাইলের নতুন লোকেশন। কাজেই সময় নষ্ট হয়, পিসি স্লো হয়ে যায়। রেজিস্ট্রি বুষ্টার সেই অদরকারী ও ভাঙ্গা এনট্রিগুলোকে সারিয়ে তুলে পিসিকে স্পিডি করে দেয়।

সফটওয়ারটি ইন্সটলের পর Scan Now বাটনে ক্লিক করুন, সে ক্ষতিগ্রস্থ রেজিস্ট্রি এনট্রি গুলো খুজে বের করবে এবং দেখাবে ঠিক কতগুলো এন্ট্রি সে খুজে পেয়েছে।

এখন Clean Registry বাটনে ক্লিক করুন, রেজিস্ট্রি ব্যাক আপ করার অপশন দেবে, অবস্যই ব্যাক আপ করতে বলবেন। তারপর কিছু সময় আপনার পিসি হ্যাং করার মত হবে, ঘাবড়াবার কিছু নেই, ব্যাক আপ শেষ হলে সফটওয়ারটি রেজিস্ট্রি ইরোর গুলো ফিক্স করবে। শেষ হলে রিস্টার্ট করতে চাইবে, রিস্টার্ট হলে পিসির স্পীডের পরিবর্তনটুকু আপনি নিজেই অনুভব করতে পারবেন।

============= ============= =============

মনে রাখবেন, সফটওয়ার দুটি ইনস্টল করার পর সিরিয়াল নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রি না করে নিলে কোন ইরোর ফিক্স করবেনা।

সফটওয়ার দুটি একটি জিপ ফাইলে (প্রয়োজনীয় সিরিয়াল সহ) ডাইনলোড করুন এখান থেকে

http://www.somewhereinblog.net/blog/shopnojoyiblog/29021454

এর দ্বারা পোস্ট করা ictclb এই সময়ে ৬:২৭ pm 0 মন্তব্য(সমূহ)
// 

হার্ড ডিস্ক মেইনটেনেন্স – পর্ব ২

~স্বপ্নজয়~

হার্ড ডিস্ক মেইনটেনেন্স – পর্ব ১

বেসিক মেইনটেনেন্স খুবই সোজা, ঘাবড়ে যাবার মত, বা না পারার মত কোন কিছু নয়। বর্ননার সাথে সাথে ছবি দেয়া আছে। এই পদ্ধতিটি উইন্ডোজ পিসির জন্য করা। আশা করি সবাই কাজগুলো করতে পারবেন। আর কোন প্রকার সমস্যা হলে তো আমরা আছিই।

প্রথম কাজঃ ডিস্ক ক্লিন আপ

মেইনটেনেন্সের প্রথম ধাপেই যা করতে হবে তা হলো হার্ড ডিস্কে জমে যাওয়া জঞ্জাল অর্থাৎ অপ্রয়োজনীয় ফাইলগুলো মুছে ফেলতে হবে। এটি করার জন্য আমরা উইন্ডোজের ডিস্ক ক্লিন আপ টুলটি ব্যবহার করবো।

১) ডেস্কটপ অথবা অল প্রোগ্রামস থেকে মাই কম্পিউটারে ক্লিক করতে হবে। তখন যে উইন্ডোটি আসবে তা অনেকটা নীচের ছবিটির মত। আপনার হার্ড ডিস্কে পার্টিশন বেশি হলে C ড্রাইভের পর D,E,F … এভাবে আরও অনেক ড্রাইভ দেখাবে। কিন্তু আমরা শুধু C ড্রাইভটি নিয়ে কাজ করবো।

২) C ড্রাইভে রাইট ক্লিক করলে যে মেনুটি আসবে তার সব চাইতে নীচে থাকবে Properties. ওখানে ক্লিক করুন, নীচের ছবির মত একটি উইন্ডো আসবে।

৩) উইন্ডোজের মাঝামাঝি থাকা ডিস্কের গোল ছবিটার পাশে Disk Cleanup লেখা বাটনটিতে ক্লিক করুন, নীচের ছবির মত উইন্ডো আসবে।

৪) Files to Delete এর নীচে যত গুলো চেক বক্স আছে সব গুলোতে টিক দিয়ে দিন। তারপর Disk Cleanup এর পাশে More Options ট্যাবে ক্লিক করুন, নীচের উইন্ডোটি আসবে।

৫) এই ট্যাবে তিনটা ভাগ, সব চাইতে নীচে আছে System Restore। এর পাশে একটা বাটন Clean up… ক্লিক করুন। একটা ছোট পপ আপ উইন্ডো আসবে, যার দুইটা বাটন Delete আর Cancel. এখান থেকে Delete এ ক্লিক করুন। খানিকটা সময় নেবে ফাইল গুলো ডিলিট করতে। হয়ে গেলে একেবারে নীচে দুটি বাটন OK আর Cancel থেকে OK বাটনে ক্লিক করুন। আরেকটা পপ আপ উইন্ডো আসবে, সেখান থেকে Delete Files বাটনে ক্লিক করুন। ফাইল ক্লিন আপ শুরু হবে। শেষ হয়ে গেলে ডিস্কের গোল ছবিটা সহ যে উইন্ডোটা প্রথমে খুলেছিলেন, সেটার নীচে OK লেখা বাটনে ক্লিক করুন।

ব্যস, আপনার বেসিক ক্লিনিং পার্ট শেষ। পিসি রিষ্টার্ট করুন ও স্পিডের পরিবর্তন লক্ষ্য করুন। অবস্যই আগের চাইতে ভাল স্পীড পাবেন।

আপনি চাইলে এর পরের পার্টটা মাসে একবার করতেও পারেন, অথবা ২/৩ মাসে একবার করলেও চলে।

পরের কাজঃ ডিস্ক ইরোর চেক

১) C ড্রাইভে রাইট ক্লিক করলে যে মেনুটি আসবে তার সব চাইতে নীচে থাকবে Properties. ওখানে ক্লিক করুন, নীচের ছবির মত একটি উইন্ডো আসবে।

২) General ট্যাবের পাশ থেকে Tools ট্যাবে ক্লিক করুন। নীচের উইন্ডোটির মত উইন্ডো দেখতে পাবেন।

৩) এই উইন্ডোর উপরে Error-checking অপশনের ভেতর থেকে Check Now বাটনটি ক্লিক করলে দুইটি অপশন সহ ছোট উইন্ডোটি খুলবে। দুটি বক্সের টিক দিয়ে দিন। তারপর Start এ ক্লিক করুন। একটা ছোট পপ আপ উইন্ডো আসবে, যেটা বলবে যে উইন্ডোজ চাল তথাকা অবস্থায় ডিস্ক চেক করা সম্ভব না, আপনি কি ডিস্ক চেক সিডিউলড করে রাখতে চান? Schedule Disk Check বাটনে নিশ্চিন্তে ক্লিক করুন।

এবার কম্পিউটার রিষ্টার্ট করুন। চালু হবার পর ডেস্কটপ আসার আগে নীচের উইন্ডোর মত ডিস্ক চেক করতে থাকবে।

মনে রাখবেনঃ

ডিস্ক চেক সিডিউল ক্যানসেল করার জন্য আপনাকে রিষ্টার্ট করার পরেই কয়েক সেকেন্ড সময় দেবে। আপনি চাইলে – মানে কম্পিউটারে কোন জরুরী কাজ থাকলে সে সময় যে কোন কি চেপে ডিস্ক চেক ক্যানসেল করতে পারেন, কিন্তু পরের বার রিষ্টার্ট করতে গেলে আবার সিডিউল দেখাবে। কাজেই সবকাজ শেষ করে ডিস্ক চেক দেয়া উচিৎ। চেক শেষ হতে কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘন্টা সময়ও লাগতে পারে। কাজেই সময় বেশী লাগলে ঘুমিয়ে যেতে পারেন। ডিস্ক চেক শেষ হবার পর পিসি রিষ্টার্ট হবে। সে সময় আপনি পিসির সামনে না থাকলেও ঘন্টা খানেক পর পিসি আপনা থেকেই স্লিপ মোডে চলে যাবে।

Source

এর দ্বারা পোস্ট করা ictclb এই সময়ে ৬:২২ pm 0 মন্তব্য(সমূহ)
// 

হার্ড ডিস্ক মেইনটেনেন্স – পর্ব ১

~স্বপ্নজয়~

মাঝে মাঝে খুব বিরক্ত করে মানুষ। গভীর রাতে ফোন দিয়ে ঘুম থেকে টেনে তুলে জিজ্ঞেস করে “ভাই, ঘুমাচ্ছেন”? মনে হয় বলি – না ভাই, ঘুমের ভান করে মটকা মেরে পড়ে ছিলাম আর আপনার ফোনের জন্য ওয়েট করছিলাম। আমার এক বন্ধু ( না হলেই ভাল ছিলো X( ) আছে এখানে, ওর ফোন তখনই আসে যখন ওর কম্পিউটারে কোন সমস্যা দেখা দেয়। ঈদের রাতেও সে যদি ফোন দেয়, আমি জানি যে সে শুভেচ্ছা জানাতে ফোন দেয়নি। এমন আরও অনেকে আছে, কারও না কারও মাধ্যমে আমার নম্বর যোগার করে সময় অসময়ে ফোন দেয় এই ‘ফেল কড়ি মাখো তেল’ দেশে ফ্রীতে কম্পিউটার সারিয়ে নিতে। সমস্যা আমার মাঝেও আছে। নষ্ট কম্পিউটার দেখলে আমার চোখ চকচক করে ওঠে। ব্যাপারটা একটা চ্যালেঞ্জ মনে হয়, দেখি ব্যাটা কম্পিউটার বেশী পারে না আমি :D:D

কম্পিউটারের যে সমস্যা গুলো সব চাইতে বেশী আসে তা হলো –

১) কম্পিউটার হঠাৎ করে খুব স্লো হয়ে গেছে
২) কম্পিউটার একটু আগেও বা গতকাল কাজ করছিল ভালই, আজকে চালুই হচ্ছেনা
৩) হার্ড ডিস্ক শব্দ করছে খুব
৪) ডিস্ক ইরর দিচ্ছে বার বার
৫) সি ড্রাইভে জায়গা কম বলছে
৬) কোন কোন প্রোগ্রাম লোড হতে অতিরিক্ত সময় নিচ্ছে বা লোডই হচ্ছেনা
৭) কম্পিউটার চলতে চলতে একটা নীল স্ক্রিন আসছে (ব্লু স্ক্রিন অফ ডেথ :|)
৮) বিনা কারনে রিষ্টার্ট হচ্ছে কম্পিউটার
৯) কম্পিউটার শাট ডাউন হচ্ছেনা
১০) ডেস্কটপ আসার পর বা কোন প্রোগ্রাম ওপেন করার পর হ্যাং করছে

এই সব সমস্যাই সরাসরি হার্ড ডিস্কের সাথে সম্পর্কযুক্ত। খুব সামান্য কিছু কাজ করেই এই সমস্যাগুলো সমাধান করা যায়, এগুলো মোটামুটি সবাই করতে পারবে, কোন কম্পিউটার প্রফেশনালের কাছে ধরণা দেয়া ছাড়াই। কেবলমাত্র হার্ড ডিস্ক শব্দ করা ছাড়া অন্য কারনগুলোতে পিসির কেসিং খুলতেও হয়না। সামান্য কিছু মেইনটেনেন্স যদি করেন, প্রতিদিন তো নয়ই, সপ্তাহেও নয়, মাত্র এক মাসে একবার, তাহলেও এই সমস্যা গুলোর অনেক গুলোই এড়াতে পারবেন।

কম্পিউটারের বেসিক মেইনটেনেন্স এর ধারনা গুলো দেই।

১) আপনার পিসি একটি যন্ত্র, সে আপনার জন্য কাজ করে। আপনার কি বোর্ডের প্রতিটি কি প্রেস বা মাউসের প্রতিটি নড়াচড়ায় সে রেসপন্ড করে। তাই, খাওয়া দাওয়ার প্রয়োজন না থাকলেও মনিটর, কি বোর্ড আর কেসিং নরম কাপড় দিয়ে নিয়মিত মুছে দেয়া ছাড়াও এর আরও কিছু যত্নের দরকার আছে।

২) পিসির মেইনটেনেন্সের বেসিক আর কমন টুল গুলো আপনার উইন্ডোজেই (মুলত সব অপারেটিং সেষ্টেমেই) দেয়া আছে, এর জন্য বাড়তি সফটয়ার ইনস্টল করার তেমন কোন দরকার নেই।

৩) বেসিক মেইনটেনেন্স করতে আপনাকে কম্পিউটার বিদ্যায় পারদর্শি হতে হবেনা। কম্পিউটার চালাতে জানলেই হবে।

৪) মেইনটেনেন্স চালু হলে আপনাকে পিসির সামনে রাত জেগে মাছি তাড়াতে হবেনা, ঘুমোবার আগে চালু করে দিয়ে ঘুমিয়ে যাবেন, মেইনটেনেন্স শেষে পিসি চালু হয়ে গেলেও যদি তা সারা রাত চালু থাকে, তাহলে পিসির কোন ক্ষতি হবেনা।

৫) মেইনটেনেন্স করার সময় বড় ধরনের কোন সমস্যা হবার সম্ভাবনা খুব কম। আপনার পিসির হার্ড ডিস্ক খুব বেশী পুরানো, মানে ৩/৪ বছরের পুরানো না হলে চিন্তার তেমন কিছুই নেই।

৬) যতক্ষন পিসি চালু থাকে, হার্ড ডিস্কের ভেতর ডিস্কটা খুব জোরে ঘুরতে থাকে, ফলে এর ভেতরের যন্ত্রপাতি ক্ষয় হতে থাকে। তাই ৩ বছরের পুরানো হার্ড ডিস্ক বদলে ফেলা, অন্তত ব্যাক আপ হার্ড ডিস্ক কিনে ফেলাও পিসি মেইনটেনেন্সের একটা অংশ।

৭) হার্ড ডিস্ক নষ্ট হওয়ার বড় একটা কারন পাওয়ার সার্জ। বিদ্যুতের ওঠানামা, পিসি চালু অবস্থায় কারেন্ট চলে যাওয়া, পিসির কুলিং ফ্যান ঠিক ভাবে কাজ করা (হার্ড ডিস্ক বেশী গরম হয়ে গেলে), প্রয়োজনের তুলনায় কম র‌্যাম ব্যাবহার হার্ড ডিস্কের ওপর যথেষ্ট চাপ ফেলে।

৮) প্রতিবার কম্পিউটার চালু করার পর হার্ড ডিস্কে অনেক অপ্রয়োজনীয় ফাইল তৈরী হয়, যা কম্পিউটার নিজে থেকে মুছতে পারেনা। সে জন্য হার্ড ডিস্কে কোন কিছু সেইভ না করলেও ডিস্ক ভরে যেতে থাকে, ফলে জায়গার অভাব দেখা দেয়। মেইনটেনেন্স করে খুব সহজেই এই অদরকারী ফাইল গুলো মুছে ফেলা যায়, ফলে পিসির সি ড্রাইভে জায়গা অনেক বেড়ে যায়।

৯) কম্পিউটারের সব প্রোগ্রাম সঠিক ভাবে চলার জন্য নির্দিষ্ট পরিমান হার্ড ডিস্ক স্পেস বা জায়গার দরকার হয়, সেই পরিমান জায়গা না পেলে প্রোগ্রাম গুলো ক্রাস (হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়া) করে বা পিসি হ্যাং করে।

১০) হার্ড ডিস্ক ইরর দেয়া মানেই ডিস্কটা বদলে ফেলতে হবে, বা উইন্ডোজ রি ইন্সটল করতে হবে – এমন নয়। অনেক সময়েই শুধু মেইনটেনেন্স করেই এই সব ইরর সারিয়ে তোলা যায়।

http://www.somewhereinblog.net/blog/shopnojoyiblog/29014753

এর দ্বারা পোস্ট করা ictclb এই সময়ে ৬:০৯ pm 0 মন্তব্য(সমূহ)
লেবেলসমূহ: ,
// 

পিসিআই এক্সপ্রেস

পেরিফেরাল কম্পোনেন্ট ইন্টারকানেক্ট (পিসিআই) স্লট হচ্ছে কমপিউটার আর্কিটেকচারের একটি সমন্বিত অংশ, যা বেশিরভাগ কমপিউটার ব্যবহারকারীই ব্যবহার করে থাকেন৷ অনেক বছর ধরে মাদারবোর্ডের সাথে সাউন্ড কার্ড, ভিডিও কার্ড এবং নেটওয়ার্ক কার্ডের সংযোগ স্থাপনের কাজে পিসিআই ব্যবহার হয়ে আসছে৷ কিন্তু পিসিআই’র কিছু সীমাবদ্ধতা রছে৷ প্রসেসর, ভিডিও কার্ড, সাউন্ড কার্ড এবং নেটওয়ার্ক কার্ড ক্রমশ দ্রুততর ও আরো শক্তিশালী হচ্ছে৷ কিন্তু পিসিআই সেই একই অবস্থায় রয়েছে৷ এর ৩২ বিটের একটি নির্ধারিত প্রস্থ রয়েছে এবং এটি একই সময়ে সর্বোচ্চ ৫টি ডিভাইস ধারণ করতে পারে৷ পিসিআই এক্সপ্রেস নামের একটি নতুন প্রটোকল এসব সীমাবদ্ধতার অনেক কিছুই দূর করছে৷ অধিকতর ব্যান্ডউইডথ সরবরাহের মাধ্যমে সে এই কাজগুলো করছে৷ পিসিআই এক্সপ্রেস বর্তমানে প্রচলিত অপারেটিং সিস্টেমগুলোর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ৷ এ লেখায় আলোচনা করা হয়েছে কী কী বিষয় পিসিআই এক্সপ্রেসকে পিসিআই থেকে আলাদা করেছে৷ এ লেখায় আমরা আরো দেখব যে, কিভাবে পিসিআই এক্সপ্রেস কমপিউটারকে আরো দ্রুতগতিসম্পন্ন করে তোলে, গ্রাফিক্স পারফরমেন্স যোগ করে এবং এজিপি স্লট প্রতিস্থাপন করে৷

উচ্চগতির সিরিয়াল সংযোগ :

কমপিউটিংয়ের প্রাথমিক যুগে সিরিয়াল সংযোগের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণ ডাটা স্থানান্তর করা হতো৷ কমপিউটার ডাটাগুলো প্যাকেট আকারে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করত৷ সিরিয়াল সংযোগ বেশ দৃঢ়, কিন্তু খুব ধীরগতিসম্পন্ন৷ তাই উত্পাদনকারীরা একই সাথে অনেক ডাটা স্থানান্তরের জন্য প্যারালাল সংযোগ ব্যবহার শুরু করে৷ কিন্তু প্যারালাল সংযোগের গতি উচ্চ থেকে উচ্চতর হওয়ায় বেশ কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়৷ যেমন-তারগুলো বিদ্যুৎ চুম্বকীয়ভাবে একটি আরেকটির সাথে মিশে যায়৷ আর তাই এখন আবার উচ্চমানসম্পন্ন সিরিয়াল সংযোগের ব্যবহার হচ্ছে৷ হার্ডওয়্যারের উন্নতি এবং ডাটা প্যাকেটের লেবেলিং ও অ্যাসেম্বলিংয়ের উন্নততর পদ্ধতির কারণে এখন বেশ দ্রুতগতির সিরিয়াল সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে৷ যেমন-ইউএসবি ২.০ এবং ফায়ারওয়্যার৷

পিসিআই এক্সপ্রেস হলো একটি সিরিয়াল সংযোগ, যা অনেকটা নেটওয়ার্কের মতো কাজ করে৷ কিন্তু বাসের মতো নয়৷ একটি বাসের পরিবর্তে (যাবিভিন্ন উত্স থেকে প্রাপ্ত ডাটা হ্যান্ডেল করে) পিসিআই এক্সপ্রেস স্যুইচ ব্যবহার করে, যা কয়েকটি পয়েন্ট টু পয়েন্ট সিরিয়াল সংযোগ নিয়ন্ত্রণ করে৷ স্যুইচ থেকে বের হয়ে আসা এই সংযোগগুলো যেসব ডিভাইসে ডাটা যাওয়া দরকার সেসব ডিভাইসের সঙ্গে সংযুক্ত হয়৷ প্রতিটি ডিভাইসেরই নিজস্ব উচ্চগতিসম্পন্ন সংযোগ রয়েছে৷ তাই বাসের মতো এই ডিভাইসগুলোর ব্যান্ডউইডথ শেয়ার করতে হয় না৷

পিসিআই এক্সপ্রেস লেন :

যখন কমপিউটার চালু হয়, তখন পিসিআই এক্সপ্রেস শনাক্ত করে যে কোন ডিভাইসটি মাদারবোর্ডের সাথে সংযুক্ত হয়েছে৷ এটি পরে ডিভাইসগুলোর মধ্যকার লিঙ্কগুলো শনাক্ত করে৷ ডিভাইস ও সংযোগসমূহের শনাক্তকরণের এই প্রক্রিয়ার জন্য পিসিআই যে প্রটোকল ব্যবহার করে, পিসিআই এক্সপ্রেসও এই কাজের জন্য ঠিক একই প্রটোকল ব্যবহার করে৷ কাজেই পিসিআই এক্সপ্রেসের জন্য সফটওয়্যার বা অপারেটিং সিস্টেমের কোনো পরিবর্তনের দরকার হয় না৷

পিসিআই এক্সপ্রেসের প্রতিটি লেন দুই জোড়া তার ধারণ করে একই ডাটা পাঠানোর জন্য ও ডাটা নেয়ার জন্য৷ লেনগুলোর মধ্যে ১ বিট/সাইকেল গতিতে ডাটাগুলো চলাচল করে৷ একটি x১ সংযোগের (সবচেয়েছোটপিসিআই এক্সপ্রেস সংযোগ) একটি লেন আছে, যা চারটি তার দিয়ে তৈরি৷ এটি প্রতিটি দিকে (direction) ১ বিট/সাইকেল হারে ডাটা বহন করে৷ একটি x২ লিঙ্ক আটটি তার ধারণ করে এবং একই সাথে দুই বিট ডাটা বহন করে৷ একটি x৪ লিঙ্ক একই সাথে চার বিট ডাটা বহন করে৷ পিসিআই এক্সপ্রেসের অন্য সংযোগগুলো হলো x১২, x১৬ এবং x৩২৷

ডেস্কটপ ও ল্যাপটপ কমপিউটারের জন্য পিসিআই এক্সপ্রেস সচরাচর পাওয়া যায়৷ এর ব্যবহারে মাদারবোর্ড তৈরিতে কম খরচ লাগে, কারণ এতে কিছু পিন রয়েছে যা পিসিআই সংযোগে থাকে৷ অনেক ডিভাইস যেমন-ইথারনেট কার্ড, ইউএসবি ২ এবং ভিডিও কার্ড ইত্যাদি সাপোর্ট করার ক্ষমতা এর রয়েছে৷

পিসিআই এক্সপ্রেস সংযোগের গতি : ৩২ বিট পিসিআই বাসের সর্বোচ্চ ৩৩ মেগাহার্টজ গতি থাকে, যা বাসের মধ্য দিয়ে গতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ১৩৩ মেগাবাইট ডাটার চলাচল অনুমোদন করে৷ ৬৪ বিট পিসিআই X বাসের প্রস্থ পিসিআইর বাসের প্রস্থের দ্বিগুণ৷ বিভিন্ন ধরনের পিসিআই X প্রতি সেকেন্ড ৫১২ মেগাবাইট থেকে শুরু করে ১ গিগাবাইট পর্যন্ত বিভিন্ন গতির ডাটার চলাচল অনুমোদন করে৷ কিন্তু একটি ক্ষুদ্র পিসিআই এক্সপ্রেসে প্রতি সেকেন্ডে ২০০ মেগাবাইট ডাটা চলাচল করতে পারে৷

পিসিআই এক্সপ্রেস এবং অগ্রগামী গ্রাফিক্স :

পিসিআই এক্সপ্রেস এজিপি সংযোগের প্রয়োজনীয়তা দূর করতে পারে৷ বর্তমানে প্রচলিত একটি ৪x এজিপি সংযোগের তুলনায় একটি x১৬ পিসিআই এক্সপ্রেস স্লট আরো অধিক ডাটা সামলাতে পারে৷ এছাড়াও একটি x১৬ পিসিআই এক্সপ্রেস স্লট ভিডিও কার্ডে ৭৫ ওয়াট পাওয়ার সরবরাহ করতে পারে, যেখানে একটি ৪x এজিপি সংযোগ পারে ২৫ ওয়াট কিংবা ৪২ ওয়াট৷

দুটি x১৬ পিসিআই এক্সপ্রেস সংযোগের একটি মাদারবোর্ড একই সময়ে দুটি গ্রাফিক্স অ্যাডাপ্টার সাপোর্ট করতে পারে৷ অনেক উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠান বর্তমানে স্কেল্যাবল লিঙ্ক ইন্টারফেস (এলএলআই), ক্রসফায়ার, ভিডিও অ্যারে ইত্যাদি সুবিধা দেয়ার জন্য নিজ নিজ পণ্য তৈরি করছে যা পিসিআই এক্সপ্রেসের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ৷

এর দ্বারা পোস্ট করা ictclb এই সময়ে ১:৪১ am 0 মন্তব্য(সমূহ)
লেবেলসমূহ: ,
// 
নিজে নিজেই পিসি সংযোজন-2


কমপিউটারের যন্ত্রাংশগুলোকে সঠিকভাবে লাগিয়ে তাকে পুরো কমপিউটারে রূপ দেয়াকেই বলা হয় হার্ডওয়্যার অ্যাসেম্বলিং বা হার্ডওয়্যার সংযোজন। অনেকেই মনে করেন হার্ডওয়্যার সংযোজন খুব কঠিন কাজ। আসলে কাজটি খুবই সহজ। একটু দেখেশুনে আগ্রহ নিয়ে কাজটি শুরু করলে খুব সহজেই তা করা যায়। হার্ডওয়্যার সংযোজন নিয়ে যাদের ভীতি রয়েছে, তাদের জন্যই এ প্রতিবেদনে কিভাবে নিজ হাতে হার্ডওয়্যার সংযোজন করা হয়, তা চিত্রসহ পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হলো।

আপনি হার্ডওয়্যার অ্যাসেম্বলিং সম্পর্কে একেবারেই নতুন বা কিছুই জানেন না, হঠাৎ জরুরি প্রয়োজনের সময় আপনার কমপিউটারে কোনো সমস্যা দেখা দিল, তখন আপনি কী করবেন? আপনার কাজ হবে দোকানে নিয়ে গিয়ে তা ঠিক করিয়ে আনা। আর তার জন্য কষ্ট করে কমপিউটার ক্যাসিং বগলদাবা করে হন্যে হয়ে ছুটতে হবে দোকানে, তাতে আরো যোগ হবে যাতায়াত খরচ, সময়ের অপচয় এবং সেই সাথে কিছুটা দুশ্চিন্তাও। অথচ হার্ডওয়্যার অ্যাসেম্বলিং বা ট্রাবলশূটিং সম্পর্কে আপনার সামান্য কিছু জ্ঞান থাকলে এত কষ্ট করতে হবে না। ঘরে বসে কয়েক মিনিটের মধ্যে আপনি কমপিউটার নিজেই ঠিক করে ফেলতে পারবেন।

নিজ হাতে সংযোজন করার উপকারিতা

যারা নিজ হাতে কমপিউটার অ্যাসেম্বলিং করবেন তাদের বেশ কিছু লাভ হবে : ০১. তারা জানতে পারবেন কমপিউটারের কোন যন্ত্রাংশ কোথায় লাগাতে হয় এবং তারা কিভাবে একত্রে কাজ করে, ০২. কমপিউটার হার্ডওয়্যার বা কমপিউটারের অভ্যন্তরীণ অংশের সাথে ভালোভাবে পরিচিতি লাভ করবেন, ০৩. হার্ডওয়্যার সম্পর্কে ভালো ধারণা পাবেন, ০৪. হার্ডওয়্যারজনিত ছোটখাটো সমস্যা খুব সহজেই সমাধান করতে পারবেন, ০৫. পিসি আপগ্রেড করার ব্যাপারে ভালো ধারণা করতে পারবেন, ০৬. আলাদাভাবে নতুন কেনা কোনো যন্ত্রাংশ খুব সহজেই লাগিয়ে নিতে পারবেন, ০৭. এতে আপনার কিছু টাকা বাঁচবে এবং সেই সাথে নতুন একটি বিষয় শেখার আনন্দ তো রয়েছেই।

হার্ডওয়্যার সংযোজন

প্রথমেই যন্ত্রাংশগুলো লাগানোর জন্য ভালো দেখে জায়গা বাছাই করে নিন, যেখানে পর্যাপ্ত আলো বিদ্যমান। এরপর বিভিন্ন আকারের স্ক্রু লাগানোর জন্য একটি ভালো স্টার হেডেড স্ক্রু-ড্রাইভার নিতে হবে। যন্ত্রাংশগুলো মাদারবোর্ডে লাগানোর ক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে, যাতে করে তাদের মাঝে যথেষ্ট ফাঁকা জায়গা থাকে এবং ক্যাবলগুলো জট পাকিয়ে বা ফ্যানের সাথে না লেগে থাকে।

প্রসেসর সংযোজন

বাজারে আগে পিনযুক্ত প্রসেসর ছিল এবং সেগুলোকে মাদারবোর্ডের সকেটের ছিদ্রে বসানো হতো। কিন্তু বর্তমানের প্রসেসরগুলোয় সাধারণত পিন ব্যবহার করা হয় না, বরং মাদারবোর্ডের প্রসেসরের জন্য বরাদ্দ সকেটেই পিন থাকে এবং প্রসেসরগুলোয় পিনের সমানসংখ্যক ছিদ্র থাকে। যারা নতুন পিসি কিনবেন, তাদের সবারই পিন ছাড়া প্রসেসর কিনতে হবে। কারণ এখন পিনযুক্ত প্রসেসর ও সাপোর্টেড মাদারবোর্ডের সংখ্যাও খুব কম। অনেকের হয়তো পুরনো পিনযুক্ত প্রসেসর কোনো কারণে খুলে লাগাতে হতে পারে, তাই দুই ধরনের প্রসেসর সংযোজন সম্পর্কেই আলোচনা করা হলো-

  

  

প্রথমেই মাদারবোর্ডে বর্গাকার প্রসেসরের স্লট বা সকেটটির পাশে থাকা লিভারকে টেনে ওপরের দিকে তুলুন, তারপর প্লেটটি ওপরে তুলুন। পিনবিহীন প্রসেসরের ক্ষেত্রে লক্ষ করুন, প্রসেসরের নিচের দিকে বর্গাকারে কয়েক সারিতে অনেকগুলো ছিদ্র সাজানো আছে। কিন্তু ভালো করে খেয়াল করলেই দেখতে পাবেন সারির মধ্যের কিছু ছিদ্র বন্ধ করা এবং মাদারবোর্ডের সকেটটির দিকে নজর দিলেও দেখা যাবে সেখানের পিনের সারির মধ্যে কয়েকটি পিন নেই । এখন প্রসেসরের ছিদ্রগুলো সকেটের পিনের সাথে মিলিয়ে তা স্থাপন করে আলতো চাপ প্রয়োগ করুন, দেখবেন খুব মসৃণভাবে প্রসেসর সকেটে ঢুকে যাবে। আর যদি পিন ও ছিদ্রের অবস্থান এক না থাকে তবে শত চেষ্টা করেও প্রসেসর সকেটে ঢোকাতে পারবেন না বরং এতে করে পিন ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। প্রসেসর সকেটে স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হলে প্লেটটি নামিয়ে প্রসেসরটিকে ঢেকে তারপর লিভারটি টেনে আবার যথাস্থানে লাগান। পুরনো পিনযুক্ত প্রসেসরকে সকেটে স্থাপনের জন্য একইভাবে পিনের সাথে ছিদ্রগুলোর অবস্থান মিলিয়ে হাল্কা চাপ দিয়ে আটকে দিন। এসব সকেটে শুধু লিভার থাকে কোনো প্লেট থাকে না।



প্রসেসরের সাথে প্রসেসরের জন্য কুলিং ফ্যান দেয়া থাকে, তবে ইচ্ছে করলে আপনি আরো ভালোমানের কুলিং ফ্যান আলাদাভাবে কিনে নিতে পারেন। কুলিং ফ্যানটি হিট সিঙ্কের (তামার অংশ) সাথে স্ক্রু দিয়ে যুক্ত থাকে সেটি খোলার দরকার নেই, কিন্তু অনেক দিন ব্যবহারের পর হিট সিঙ্ক ও ফ্যানে ময়লা জমা হয়। তখন ফ্যানটি খুলে হিট সিঙ্কটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে আবার লাগাতে হয়। তা না হলে ফ্যানের কার্যক্ষমতা কমে যায়। হিট সিঙ্কসহ ফ্যানটি লাগানোর জন্য হিট সিঙ্কের পাশের দুটো ক্লিপ বা লিভার টেনে ওপরে তুলতে হবে, তারপর হিট সিঙ্কের নিচের প্রান্তটি প্রসেসরের ওপরে বসিয়ে ক্লিপগুলো আবার নামিয়ে দিতে হবে। প্রসেসরের সকেটের বাম পাশে মাদারবোর্ডে চার পিনযুক্ত পাওয়ার পোর্ট আছে যেখানে ফ্যানের কানেক্টরটি লাগাতে হবে চিত্রের মতো করে।

ক্যাসিংয়ে মাদারবোর্ড সংযোজন


 

ক্যাসিংয়ে মাদারবোর্ড বসানোর জন্য প্রথমে ক্যাসিংয়ের ঢাকনাটি খুলে ফেলুন। তারপর ক্যাসিংয়ের খোলা অংশ ওপরের দিকে রেখে ক্যাসিংকে শুইয়ে দিন। এখন মাদারবোর্ডের পোর্টগুলো ক্যাসিংয়ের পেছনের অংশ দিয়ে যাতে দেখা যায় সে জন্য ফেক-প্লেট বা ব্যাকপ্লেটটি সরিয়ে ফেলুন। তাহলেই মাউস, কীবোর্ড, বিল্ড-ইন সাউন্ডকার্ডের পোর্ট ও অন্যান্য পোর্টের জন্য বিভিন্ন আকারের ফুটো করা আছে। এখন মাদারবোর্ডটি নিয়ে ক্যাসিংয়ের মধ্যে এমনভাবে রাখতে হবে যাতে মাদারবোর্ডের রিয়ার প্যানেলের পোর্টগুলো ব্যাকপ্লেটটি যেখান থেকে সরানো হয়েছে সেই অংশের দিকে থাকে। মাদারবোর্ড বসানোর পর দেখতে হবে পোর্টগুলো পেছনের ফুটো দিয়ে সঠিকভাবে বের হয়েছে কি-না। এখনকার মাদারবোর্ডগুলোর সাধারণত এটিএক্স, মাইক্রো এটিএক্স ও মিনি এটিএক্স ফর্ম ফ্যাক্টরযুক্ত, যা দিয়ে মাদারবোর্ডের আকার বোঝা যায়। তাই যেকোনো এটিএক্স ক্যাসিংয়ে খুব সহজেই এগুলো বসানো যায়। মাদারবোর্ডের আকার অনুসারে এর সাথে দেয়া স্ক্রু হোল্ডারগুলো জায়গামতো বসিয়ে স্ক্রু ব্যবহার করে এটিকে ক্যাসিংয়ের সাথে ভালোভাবে লাগিয়ে দিন।

ক্যাসিংয়ের পাওয়ার সাপ্লাই থেকে অনেকগুলো পাওয়ার ক্যাবল বের হয়েছে সেখান থেকে ATX পাওয়ার কানেক্টরটি নিয়ে মাদারবোর্ডের ATX পাওয়ার কানেক্টরে (মেইনপাওয়ার) যুক্ত করুন (চিত্র-১০)। এরপর মাদারবোর্ড থেকে অন্যান্য অংশে যেমন- কুলিং ফ্যান, হার্ডডিস্কের লাইট, ক্যাসিংয়ের পাওয়ার ও রিসেট বাটন প্রভৃতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য কিছু কানেক্টর যুক্ত করতে হয়, এগুলোকে ফ্রন্ট প্যানেল কানেক্টর বলা হয়। সাধারণত প্রতিটি কানেক্টরের গায়ে ও মাদারবোর্ডের পিনগুলোর পাশে নাম দেয়া থাকে। মাদারবোর্ডের সাথে দেয়া ম্যানুয়েল বা নির্দেশিকাতে এসব কানেক্টর ও পিনগুলোর অবস্থান ও সংযোগ পদ্ধতি দেয়া থাকে, প্রয়োজনে সেটির সহায়তা নিতে পারেন। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্রন্ট প্যানেল কানেক্টরের নাম দেয়া হলো-

০১. পাওয়ার সুইচ : 



এটির কানেক্টরের গায়ে POWER SW বা PWR SW লেখা থাকতে পারে। এটি সংযোজন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি না লাগালে ক্যাসিংয়ের সামনের পাওয়ার সুইচ চেপে কমপিউটার ওপেন করার পর কোনো সবুজ বাতি জ্বলবে না। কিছু ক্ষেত্রে সবুজ বাতির পাশাপাশি আলোকোজ্জ্বল ডিজিটাল ডিসপ্লে দেয়া থাকে এবং তাতে সিস্টেমের তাপমাত্রাসহ আরো অনেক তথ্য প্রদর্শিত হয়।

০২. রিসেট সুইচ : 

এর কানেক্টরের গায়ে Reset কথাটি লেখা থাকে, এটি লাগালে পিসি কখনো হ্যাং করলে রিসেট বাটনটি চেপে কমপিউটার রিবুট করতে পারবেন।

০৩. হার্ডডিস্কের এলইডি লাইট : 

এটি লাল রংয়ের লাইট এবং হার্ডডিস্ক যে কাজ করছে তা এটির জ্বলা-নেভা দেখে বোঝা যায়।

০৪. ফ্রন্ট প্যানেলের ইউএসবি : 

অনেক ক্যাসিংয়ের সামনে দুটি ইউএসবি পোর্ট থাকে, এগুলোকে সচল করার জন্য কানেকশন দেয়া জরুরি।

০৫. ফ্রন্ট প্যানেলের অডিও : 

অনেকেই গান শোনার জন্য হেডফোন ব্যবহার করেন, কিন্তু হেডফোনটি যদি ক্যাসিংয়ের রিয়ার প্যানেলের সংযোগ থেকে আনা হয়, তাহলে তারের স্বল্পতা সৃষ্টি হতে পারে, তাই ফ্রন্ট প্যানেলটি সচল করা দরকার।

মাদারবোর্ডের ম্যানুয়াল দেখে ও কানেক্টরগুলো চিহ্নিত করে পাওয়ার সুইচ, রিসেট সুইচ ও হার্ডডিস্ক এলইডির (LED) জন্য কানেক্টরগুলো সংযোজন করুন। এরপর ফ্রন্ট প্যানেল ইউএসবি কানেক্টর লাগানোর জন্য প্রথমে ক্যাসিংয়ের ইউএসবি কানেক্টর আলাদা করে চিহ্নিত করুন। প্রতিটি ইউএসবি কানেক্টরে চারটি করে পিন থাকে। প্রতিটি কানেক্টরের ১ম পিনটি থাকে পাওয়ার ও ৪র্থ পিনটি থাকে গ্রাউন্ড কানেক্টরের জন্য ও ২য় ও ৩য় পিন দুটি যথাক্রমে ডাটা নেগেটিভ ও ডাটা পজিটিভ পিন। এছাড়া কিছু মাদারবোর্ডে IEEE ১৩৯৪ বা ফায়ারওয়্যার কানেক্টর দেখা যায় (চিত্র-১২), যার ডাটা ট্রান্সফারের ক্ষমতা সেকেন্ডে ন্যূনতম ১০০ থেকে ৪০০ মেগাবাইট পর্যন্ত। এর কানেক্টরগুলো বিভিন্ন সংখ্যার পিনের হয়ে থাকতে পারে। ফায়ারওয়্যার পোর্ট সাধারণত ভিডিও ক্যামেরা, এক্সটার্নাল ও পোর্টেবল হার্ডড্রাইভ, সিডি বার্নার ও আইপডে ব্যবহার হয়ে থাকে খুবই দ্রুতগতিতে ডাটা ট্রান্সফারের জন্য। এই পোর্ট আপনার পিসিতে থাকলে উল্লিখিত ডিভাইসগুলো থেকে ডাটা বিনিময় হবে খুবই দ্রুততর।

র্যা ম সংযোজন 

এসডি, আরডি ও ডিডিআর র্যাডমের গঠনগত পার্থক্য খুবই কম। পার্থক্য থাকে শুধু গোল্ডেন কানেক্টরে বিদ্যমান খাঁজের বা নচের সংখ্যা ও অবস্থানের। তাই যেকোনো এক ধরনের র্যারমের সংযোজন পদ্ধতি জানলেই অন্যগুলো সংযোজন করায় কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। সাধারণত প্রতি মাদারবোর্ডে ২-৪টি র্যাযম স্লট থাকে। কোন মাদারবোর্ড কোন ধরনের র্যাওম সাপোর্ট করবে, তা মাদারবোর্ডের বক্সের গায়ে বা ম্যানুয়েলে লেখা থাকে। আগে আপনার মাদারবোর্ড সাপোর্ট করে সে রকম র্যা ম বাছাই করে নিন। সাধারণত মাদারবোর্ডে বিদ্যমান র্যায়ম স্লটগুলোয় ক্রমিক সংখ্যা দেয়া থাকে। যদি মাদারবোর্ডে তিনটি র্যানম স্লট থাকে তবে তাদের পর্যায়ক্রমে ০, ১ ও ২ নামে চিহ্নিত করা থাকে। যদি একটি র্যা ম লাগানো হয় তাহলে সেটিকে ০ নাম্বার চিহ্নিত স্লটে স্থাপন করতে হয় এবং একের অধিক র্যা ম সংযোজনের প্রয়োজন হলে তা পর্যায়ক্রম বজায় রেখে লাগানো হয়। উল্লেখ্য, ০ নাম্বার চিহ্নিত র্যা ম স্লটটি প্রসেসরের স্লটের কাছাকাছি থাকে।

 

প্রথমে মাদারবোর্ডে র্যা/ম স্লটের অবস্থান চিহ্নিত করে নিন। দেখবেন প্রতিটি রম স্লটের দুই পাশে দুটো সাদা রংয়ের (বেশির ভাগ মাদারবোর্ডেই এটি সাদা রংয়ের হয়) লিভার সংযুক্ত রয়েছে। প্রথমেই লিভার দুটোকে বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে আলতো চাপ দিয়ে নামিয়ে রাখুন। তারপর র্যায়মের গোল্ডেন কানেক্টরের খাঁজ আর র্যারম স্লটে থাকা খাঁজ একই অবস্থানে আছে কি না তা যাচাই করে বুড়ো আঙ্গুল ও তর্জনী ব্যবহার করে রমটি স্লটে স্থাপন করুন এবং খাড়াভাবে একটু জোরে চাপ দিয়ে র্যাড়মটি পুরোপুরিভাবে স্লটে স্থাপন করুন। র্যাকম ঠিকমতো বসে থাকলে লিভার দুটো ওপরের দিকে উঠে আসবে, এরপর লিভার দুটোকে র্যািমের দুইপাশে বিদ্যমান খাঁজে আটকে দিন। যদি লিভার দুটো র্যারমের পাশের খাঁজে না লাগে তাহলে বুঝতে হবে র্যা ম ঠিকমতো লাগানো হয়নি, তাহলে পুনরায় চাপ দিয়ে সঠিকভাবে র্যা মটি স্লটে আটকে দিন। একের অধিক র্যা ম লাগালে একই পদ্ধতি অনুসরণ করে সেটিকে স্লটে স্থাপন করুন। র্যা্ম কখনো খোলার দরকার হলে লিভার দুটোকে নামিয়ে সাবধানে র্যা মকে ওপরের দিকে টেনে স্লট থেকে তুলে ফেলুন, তবে খুলতে গিয়ে পাশাপাশি নড়াচড়া না করাই ভালো, তাহলে গোল্ডেন কানেক্টর অংশটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

গ্রাফিক্স কার্ড সংযোজন

পূর্বে গ্রাফিক্স কার্ড বলতে ভিজিএ কার্ডকে বোঝাতো এবং এগুলো লাগানোর জন্য মাদারবোর্ডে কোনো আলাদা স্লট দরকার হতো না। সাধারণ পিসিআই স্লটগুলোতেই এক্সপানশন কার্ড হিসেবে লাগানো যেত। ভিজিএ’র জায়গা দখল করে বাজারে এসেছিলো এজিপি। কিন্তু বর্তমানে এজিপি সমর্থিত মাদারবোর্ডের প্রচলনও কমে গেছে এবং সেইখানে পিসিআই এক্সপ্রেস স্লটযুক্ত মাদারবোর্ডের প্রচলন বেড়েছে। পাঠকদের সুবিধার্থে এখানে এজিপি ও পিসিআই এক্সপ্রেস উভয় ধরনের স্লটের মধ্যে গ্রাফিক্স কার্ড সংযোজন পদ্ধতি দেখানো হলো-



এজিপি স্লটটি সাধারণত পিসিআই স্লটের থেকে আকারে ভিন্ন ও গাঢ় খয়েরি রংয়ের হয়ে থাকে। মাদারবোর্ডের পিসিআই স্লটগুলোর ওপরের দিকে অর্থাৎ মাদারবোর্ডের মাঝামাঝি স্থানে এজিপি স্লটটি অবস্থিত। এজিপি কার্ড লাগানোর আগে সর্বপ্রথম এজিপি স্লটটি শনাক্ত করে নিন। এজিপি গ্রাফিক্স কার্ডের স্লটেও র্যারম স্লটের মতো খাঁজে ভাগ করা থাকে এবং এজিপি কার্ডের গোল্ডেন কানেক্টরেও অনুরূপ খাঁজ থাকে। এজিপি কার্ড লাগানোর জন্য এটিকে স্লটে বসানোর আগে স্লটের সাথে একই লাইনে ক্যাসিংয়ের পেছন দিকে অবস্থিত টিনের পাতলা পাতগুলোর একটা সরিয়ে নিতে হবে। পাত সরানোর জন্য ক্যাসিংয়ের ভেতর দিক থেকে পাতটির ওপর জোরে চাপ দিলেই সেটি খুলে আসবে, তারপর পাতটিকে সরিয়ে রাখুন বা ফেলে দিন। সেই অংশ দিয়ে গ্রাফিক্স কার্ডের পেছনের দিকের পোর্টগুলো ক্যাসিংয়ের বাইরে বের হয়ে থাকবে। এখন র্যা মের মতোই স্লটের খাঁজ ও কার্ডের খাঁজ মিলিয়ে কার্ডটি স্লটে স্থাপন করুন, যাতে করে কার্ডের পোর্টযুক্ত অংশটুকু ক্যাসিং থেকে সরিয়ে ফেলা পাতের দিকে থাকে। সাধারণত কার্ডটি সঠিকভাবে লাগলে ক্লিক জাতীয় একটা শব্দ হয়, এটি হয় এজিপি স্লটে থাকা একটি ক্লিপের জন্য, যা কার্ডটি ঠিকমতো লাগার পর কার্ডের নির্দিষ্ট ছিদ্রে সংযুক্ত হয় এবং কার্ডটিকে নড়াচড়ার হাত থেকে রক্ষা করে। তবে আরো ভালোভাবে আটকে রাখার জন্য কার্ডের পোর্টযুক্ত স্থানটিতে একটি স্ক্রু লাগানোর ব্যবস্থা আছে, সেই স্থানে স্ক্রুটি ক্যাসিংয়ের বাঁদিকের ভেতরের দিকে উঁচু হয়ে থাকা অংশে অবস্থিত ছিদ্রের সাথে ভালোভাবে লাগিয়ে দিতে হবে।

পিসিআই এক্সপ্রেস গ্রাফিক্স কার্ডগুলো লাগানোর পদ্ধতিও এজিপির মতো। শুধু খেয়াল রাখতে হবে পিসিআই স্লটটি এজিপি স্লট থেকে বড় আকারের এবং যে মাদারবোর্ডে এজিপি স্লট আছে সেটায় পিসিআই এক্সপ্রেস স্লট নেই।

হার্ডডিস্ক সংযোজন

আইডিই হার্ডডিস্কগুলো এখন বাজারে পাওয়া বেশ কঠিন ব্যাপার। সাটা পোর্টের হার্ডডিস্কের ডাটা ট্রান্সফার করার ক্ষমতা আইডিই হার্ডডিস্কের তুলনায় বেশি হওয়ায় এগুলোর জনপ্রিয়তা এখন বেশ তুঙ্গে। তবে বাজারে SATA 1 ও SATA 2 উভয় ধরনের হার্ডডিস্ক পাওয়া যায়। পারফরমেন্সের দিক দিয়ে SATA 2 হার্ডডিস্ক SATA 1 হার্ডডিস্কের চেয়ে অধিক গতিসম্পন্ন। তবে যে মাদারবোর্ডে SATA 1 হার্ডডিস্কের জন্য যে পোর্ট আছে সেটিতে SATA 2 হার্ডডিস্ক ব্যবহার করা যাবে, তবে পারফরমেন্স পাওয়া যাবে SATA 1 হার্ডডিস্কের সমান। হার্ডডিস্ক হচ্ছে প্রাইমারি মেমরি। অপারেটিং সিস্টেমসহ অন্য অ্যাপ্লিকেশনগুলো এখানেই সুরক্ষিত থাকে, সেই সাথে সিডি ড্রাইভও একটি প্রাইমারি ডিভাইস এবং উইন্ডোজের লাইভ সিডি দিয়ে কমপিউটার পরিচালনা করা যায় সিডি ড্রাইভ থেকেই। তাই যখন সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট থেকে কোনো ডাটা খোঁজা হয় তখন তা হার্ডডিস্ক ও সিডিরম উভয় জায়গাতেই হানা দেয়। কিন্তু যদি ব্যবহারকারী সিডিরমে ডাটা খুঁজে সময় নষ্ট করতে না চান তাহলে হার্ডডিস্ককে মাস্টার এবং সিডি ড্রাইভকে স্লেভ করে দিলেই হবে (যারা একই আইডিই ক্যাবলে হার্ডডিস্ক ও অপটিক্যাল ড্রাইভ ব্যবহার করতে চান)? যারা দুটো হার্ডডিস্ক ব্যবহার করবেন তাদের ক্ষেত্রেও একটিকে (যেটাতে অপারেটিং সিস্টেম থাকবে) মাস্টার ও অন্যটিকে স্লেভ করে নিতে হবে। এখন আসা যাক কিভাবে হার্ডডিস্ককে মাস্টার করা যায় সেই কথায়।

 


প্রতিটি হার্ডডিস্ক ও সিডি ড্রাইভের মাস্টার ও স্লেভ করার পদ্ধতি এক নয়, তবে হার্ডডিস্ক বা সিডি রমের গায়ে জাম্পার কনফিগারেশন টেবিল দেয়া থাকে সেটি দেখে সহজেই ডিভাইসকে মাস্টার ও স্লেভে পরিণত করা যায়। আইডিই ও সাটা হার্ডডিস্কের মাদারবোর্ডের সাথে সংযোজন পদ্ধতি এক না হলেও ক্যাসিংয়ে স্থাপন করার পদ্ধতি একই রকম। নিচে উভয় ধরনের হার্ডডিস্ক সংযোজনের পদ্ধতি উল্লিখিত হলো-

প্রথমেই হার্ডডিস্কের পেছনের অংশে লক্ষ করুন। সেখানে বাম দিকে দুই সারিতে সাজানো ৩৯ পিনের আইডিই পোর্ট ও ডান দিকের বড় আকারের ৪ পিনের পাওয়ার ক্যাবল যুক্ত করার পোর্টের মাঝখানে দুই সারিতে ১০ পিনের আরেকটি ঘর আছে। এখানেই এই পিনগুলোর মধ্যে জাম্পার লাগানোর মাধ্যমে প্রথমে একে মাস্টার করে নিন। তারপর ফিতের মতো দেখতে আইডিই ক্যাবলটি নিন। লক্ষ করুন ক্যাবলটি অনেকগুলো ক্যাবলের সম্মিলিত রূপ এবং একদিকের একটি তার লাল রংয়ের। এখন ক্যাবলের মাথার কানেক্টরটি হার্ডডিস্কের আইডিই পোর্টের পিনের সাথে যুক্ত করার সময় দেখতে হবে লাল দাগটি সবসময় ডানদিকে থাকবে। এছাড়া আরেকটি ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে তা হচ্ছে ক্যাবলের কানেক্টরে ৩৯টি ছিদ্র আছে এবং পিনের সংখ্যাও রয়েছে ৩৯। সাধারণত নিচের সারির মাঝামাঝিতে একটা পিনও থাকে না। তাই কানেক্টরটি পিনে লাগানোর আগে পিন ও কানেক্টরের ছিদ্রের অবস্থান দেখে লাগানোই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ উল্টো করে লাগাতে চেষ্টা করলে পিন ভেঙ্গে বা বেঁকে যাবার সম্ভাবনা থাকে। এখন আইডিই ক্যাবলের অন্য প্রান্তের কানেক্টরটি মাদারবোর্ডের প্রাইমারি আইডিই (IDE 0) পোর্টের সাথে যুক্ত করতে হবে। তারপর হার্ডডিস্কে ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই করার জন্য পাওয়ার ক্যাবল যুক্ত করতে হবে। চিত্র-১৯-এ দেখানো ক্যাবলটি হচ্ছে পাওয়ার ক্যাবল এবং এটিকে হার্ডডিস্কের ৪ পিনের পাওয়ার পোর্টের সাথে সংযুক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে পাওয়ার ক্যাবলের চারটি তারের মধ্যে হলুদ তারটি লাগানোর সময় ডান দিকে থাকবে। এছাড়া পাওয়ার ক্যাবলের সাদা কানেক্টরের গায়ে আড়াআড়িভাবে উঁচু করে দাগ দেয়া থাকে, সেই অংশটি সবসময় লাগানোর সময় নিচে থাকবে।

আইডিই হার্ডডিস্কের মতো সাটা হার্ডডিস্ককেও প্রথমে মাস্টার (সাধারণত এ কাজটি বর্তমানের সাটা হার্ডডিস্কে করা লাগে না) করে নিতে হবে হার্ডডিস্কের গায়ে আকাঁ জাম্পার কনফিগারেশন টেবিল দেখে। সাটা ক্যাবল চ্যাপ্টা আকারের ও গাঢ় গোলাপী বর্ণের হয়ে থাকে । এর ডাটা ট্রান্সফারের স্পিড আইডিই ক্যাবলের থেকে বেশি। ক্যাবলের একপ্রামেত্মর কানেক্টরটি হার্ডডিস্কের পেছনের সাটা পোর্টের সাথে যুক্ত করে নিন এবং অন্য প্রান্তটি মাদারবোর্ডের সাটা পোর্টের (চিত্র-১৭) সাথে যুক্ত করতে হবে। কিছু সাটা পোর্টের হার্ডডিস্কের পাওয়ার সংযোজন পাওয়ার ক্যাবল দিয়েই করা যায়, তবে কিছু ক্ষেত্রে আলাদা কালো বর্ণের দশ পিনযুক্ত পাওয়ার ক্যাবল থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই পাওয়ার ক্যাবল সংযোজন করতে হবে।

ক্যাসিংয়ের ভেতরে সামনের দিকে হার্ডডিস্ক লাগানোর জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বা র্যা ক দেয়া থাকে এবং ক্যাসিংভেদে সাধারণত ৩-৪টি হার্ডডিস্ক লাগানোর মতো জায়গা বরাদ্দ থাকে। ক্যাসিংয়ে লাগানোর ক্ষেত্রে সব সময় ওপরের পিঠ ওপরের দিকে রাখতে হবে এবং পেছনের পোর্টযুক্ত অংশ ক্যাসিংয়ের ভেতরের দিকে রাখতে হবে, তারপর র্যায়কে ঢোকাতে হবে। হার্ডডিস্কের দুই পাশে ৩টি করে মোট ৬টি ছিদ্র আছে, ক্যাসিংয়ের র্যা কে হার্ডডিস্ক স্থাপন করার পর র্যা কের স্ক্রু লাগানোর ছিদ্রের সাথে হার্ডডিস্কের পাশের ছিদ্র এক লাইন বরাবর রেখে স্ক্রু দিয়ে ভালোভাবে আটকে দিন। ক্যাসিংয়ের দুই পাশ খোলা থাকলে অন্য পাশ থেকেও র্যারকের সাথে হার্ডডিস্ক স্ক্রু দিয়ে আটকে দিন। হার্ডডিস্কটি লাগানোর ক্ষেত্রে ৩-৪টি স্ক্রু ব্যবহার করুন, তা না হলে হার্ডডিস্কটির নড়াচড়া করার সম্ভাবনা থাকে।

অপটিক্যাল ড্রাইভ সংযোজন

সাধারণত সিডি, সিডি রাইটার, ডিভিডি, ডিভিডি রাইটার ও কম্বোড্রাইভের গঠনপ্রণালী একই ধরনের, তাই যেকোনো একটি অপটিক্যাল ড্রাইভ লাগানোর পদ্ধতি জানলেই আপনি যে ধরনের ড্রাইভই কিনে থাকুন না কেন, তা অনায়াসে লাগাতে পারবেন। তবে এখন বাজারে আইডিই স্ট্যান্ডার্ডের সিডি/ডিভিডি রমের পাশাপাশি সাটা অপটিক্যাল ড্রাইভও পাওয়া যায়। আইডিই অপটিক্যাল ড্রাইভ লাগানোর পদ্ধতি আইডিই হার্ডডিস্ক লাগানোর অনুরূপ এবং অপটিক্যাল ড্রাইভের পেছনের পোর্টগুলোও প্রায় একই ধরনের হয়ে থাকে।

  

অপটিক্যাল ড্রাইভে আইডিই ক্যাবল সংযোজন করার জন্য প্রথমে ক্যাবলের একপ্রান্ত মাদারবোর্ডের সেকেন্ডারি আইডিই পোর্টের (IDE 1) সাথে সংযুক্ত করতে হবে, যদি মাত্র একটি আইডিই পোর্ট থাকে তবে তাতে লাগাতে হবে এবং অন্যপ্রান্তের দুটো কানেক্টরের একটা অপটিক্যাল ড্রাইভে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে যদি দুটো অপটিক্যাল ড্রাইভ ব্যবহার করতে চান, তাহলে অপর আইডিই কানেক্টরটি সেই ড্রাইভে লাগান ও জাম্পার সেটিংয়ের মাধ্যমে একটি ড্রাইভকে মাস্টার ও অপরটিকে স্লেভ করে দিন। জাম্পার সেটিং করার জন্য ড্রাইভের গায়ের নির্দেশিকাটি দেখে নিন। ফ্লপি কানেক্টরও পাওয়ার ক্যাবল কেসিংয়ে দেয়া থাকে। ইচ্ছে করলে বা ফ্লপি ড্রাইভ লাগালে তা অপটিক্যাল ড্রাইভের মতো করে লাগিয়ে দিলেই হবে।

হার্ডডিস্কের তুলনায় অপটিক্যাল ড্রাইভগুলোতে একটা পোর্ট বেশি থাকে এবং তা হচ্ছে অডিও আউট পোর্ট। এখানে সিডি অডিও ক্যাবলের একপ্রান্ত যুক্ত করতে হয় ও অন্যপ্রান্ত সাউন্ড কার্ডের সাথে যুক্ত করতে হয়। এটি দেয়া হয় সিডি ড্রাইভ থেকে সরাসরি অডিও সিডি দিয়ে গান শোনার জন্য। এক্ষেত্রে সিডি ড্রাইভের সামনে অডিও আউট পোর্ট থাকে।

টিভি কার্ড সংযোজন

টিভি কার্ড দুই ধরনের : এক্সটারনাল ও ইন্টারনাল। ইন্টারনাল টিভি কার্ড টিভির অনুষ্ঠান কেটে রাখার জন্য খুবই কাজে দেয়। কিন্তু এক্সটারনাল টিভি কার্ডে অনুষ্ঠান কেটে রাখার ব্যবস্থা নেই। তবে পিসি না ছেড়েই এক্সটারনাল টিভি কার্ড ব্যবহার করে মনিটরে টিভির অনুষ্ঠান দেখা যায়। এক্সটারনাল টিভি কার্ডের সংযোজন খুবই সহজ, তাই এখানে ইন্টারনাল টিভি কার্ড লাগানোর পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। ইন্টারনাল টিভি কার্ড লাগানোর জন্য ক্যাসিংয়ের ব্যাক প্যানেলের কার্ড যেই পিসিআই স্লটে লাগানো হবে তার সংলগ্ন ফেক প্লেট বা পাতলা টিনের পাতটি ভেতর থেকে চাপ দিয়ে খুলে নিতে হবে। টিভি কার্ডের গোল্ডেন কানেক্টরেও গ্রাফিক্স কার্ড ও র্যা মের মতোই খাঁজ থাকে, সেই খাঁজ ও পিসিআই স্লটের খাঁজ মিলিয়ে কার্ডটি স্লটে স্থাপন করুন। পিসিআই স্লটগুলোতে বিভিন্ন কার্ডকে আটকে রাখার জন্য কোনো লিভার থাকে না বা এজিপি স্লটের মতো কোনো প্রকার ক্লিপও থাকে না। তাই পিসিআই পোর্টে কার্ডগুলোকে ভালোভাবে আটকে রাখার জন্য কার্ডের পোর্টযুক্ত স্থানটিতে একটি স্ক্রু লাগানোর ব্যবস্থা আছে, সেই স্থানে স্ক্রুটি ক্যাসিংয়ের বাঁদিকের ভেতরের দিকে উঁচু হয়ে থাকা অংশে অবস্থিত ছিদ্রের সাথে ভালোভাবে লাগিয়ে দিতে হবে।

সাউন্ড কার্ড, ল্যান কার্ড ও মডেম সংযোজন

সাধারণত এখনকার মাদারবোর্ডে বেশ ভালোমানের মাল্টি চ্যানেলের বিল্ট-ইন সাউন্ড কার্ড দেয়াই থাকে। তবুও কেউ যদি আরো ভালোমানের সাউন্ড কার্ড পিসিতে ব্যবহার করতে চান, তাহলে তাকে তা পিসিআই স্লটে লাগাতে হবে। লাগানোর প্রক্রিয়া হুবহু টিভি কার্ড সংযোজনের মতোই, তাই এ সম্পর্কে তেমন আলোচনার প্রয়োজন নেই। নতুন মাদারবোর্ডগুলোতে ল্যান কার্ড দেয়া থাকে তবে মডেম দেয়া থাকে না। যারা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন ব্যবহার করবেন তাদের মডেমের দরকার হবে না। মাদারবোর্ডের সাথে দেয়া ল্যান কার্ডই সে জন্য যথেষ্ট, কিন্তু যারা ডায়ালআপ ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন তাদের জন্য ল্যান কার্ড দিয়ে কাজ হবে না মডেম কেনার দরকার হবে। মডেম লাগানোর প্রক্রিয়াও টিভি কার্ড ও সাউন্ড কার্ডের মাতোই।

এক্সপানশন কার্ড

আপনার পিসিতে যদি প্রয়োজনীয় কিছু পোর্টের স্বল্পতা দেখা দেয় বা না থাকে তাহলে সেই পোর্টগুলো এক্সপানশন কার্ডের মাধ্যমে লাগিয়ে নিতে পারেন। এক্সপানশন কার্ডকে এক্সপানশন বোর্ড, এডাপ্টার কার্ড ও এক্সেসরি কার্ডও বলা হয়। বাজারে বিভিন্ন ধরনের এক্সপানশন কার্ড পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে ইউএসবি পোর্ট, ফায়ারওয়্যার, ইথারনেট পোর্ট, সাটা পোর্ট, টিভি টিউনার ইত্যাদি অন্যতম। অর্থাৎ মনে করুন আপনার একটি মুভি ক্যামেরা আছে এবং এতে ফায়ারওয়্যার পোর্ট বিদ্যমান, কিন্তু আপনার পিসির সাথে তা সংযোগ দেয়ার জন্য কোনো ফায়ারওয়্যার পোর্ট নেই তখন ফায়ারওয়্যার এক্সপানশন কার্ডের মাধ্যমে আপনি পিসিতে এই পোর্ট লাগিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন।

কুলিং ফ্যান

বর্তমানে অনেক ক্যাসিংয়ে পিসিকে ঠান্ডা রাখার জন্য রিয়ার ফ্যান ব্যতীতও ফ্রন্ট ও সাইড ফ্যান থাকতে পারে। এই ফ্যানগুলোকে দুইভাবে পাওয়ার দেয়ার ব্যবস্থা আছে। ইচ্ছে করলে পাওয়ার সাপ্লাইয়ের ক্যাবল ও ফ্যানের পাওয়ার ক্যাবলকে পরস্পরের সাথে জোড়া লাগিয়ে ফ্যানে পাওয়ার নিশ্চিত করা যায়, আবার মাদারবোর্ড থেকেও পাওয়ার দেয়ার ব্যবস্থা থাকে। সেক্ষেত্রে মাদারবোর্ডে Fan 2 লেখা পোর্ট থেকে পাওয়ার নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

ক্যাসিংয়ের ব্যাক প্যানেলে ক্যাবল সংযোজন



পাওয়ার সাপ্লাইয়ের পেছনে ওপরের দিকে (চিত্র-২১) পাওয়ার কানেক্টর লাগানোর জন্য পোর্ট থাকে সেখানে পাওয়ার ক্যাবলটি লাগাতে হবে। কিছু কিছু পাওয়ার সাপ্লাইয়ের পেছনে মেইন পাওয়ার সুইচ এবং ভোল্টেজ সিলেক্টর সুইচ (চিত্র-২১) থাকতে পারে, সেক্ষেত্রে পাওয়ার সুইচ অন করে নিতে হবে এবং ভোল্টেজ সিলেক্টরে ২২০ ভোল্ট সিলেক্ট করে নিতে হবে। উন্নত বিশ্বে ১১০ ভোল্টে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি চলে কিন্তু বাংলাদেশের বৈদ্যুতিক ভোল্টেজ ২২০ ভোল্ট, তাই যদি ভুলে ১১০ ভোল্ট সিলেক্ট করা থাকে তাহলে পাওয়ার সাপ্লাই পুড়ে যাবার আশঙ্কা থাকে।

মাউস ও কীবোর্ড সংযোজন



মাউস ও কীবোর্ডের জন্য ক্যাসিংয়ের রিয়ার প্যানেলের ওপরের দিকে দুটি PS/2 পোর্ট আছে, সেখানে এ দুটোকে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে মনে রাখার বিষয় হচ্ছে হালকা সবুজ পোর্টটি মাউসের জন্য ও হালকা বেগুনি পোর্টটি কীবোর্ডের জন্য। তবে বাজারে বর্তমানে ইউএসবি ও ওয়্যারলেস মাউস-কীবোর্ড পাওয়া যায়। ইউএসবি কীবোর্ড ও মাউস ব্যবহার করতে চাইলে এদের ক্যাবল ইউএসবি পোর্টে লাগাতে হবে, আর ওয়্যারলেসগুলো ব্যবহার করতে চাইলে ইউএসবি পোর্টে মাউস ও কীবোর্ডের সাথে দেয়া ইউএসবি সেন্সর লাগাতে হয়। সেন্সরটি ব্লু-টুথ প্রযুক্তিতে ডিভাইসটির সাথে সংযোগ রাখে।

মনিটর সংযোজন

  

মনিটর লাগানোর জন্য প্রথমে মনিটরের পাওয়ার ক্যাবলের একপ্রান্ত মনিটরে ও অন্যপ্রান্ত ইউপিএসে লাগাতে হবে। এছাড়া আপনি চাইলে ক্যাসিংয়ের পেছনের পাওয়ার সাপ্লাইয়ের পাওয়ার পোর্টের নিচে অবস্থিত (অনেক ক্যাসিংয়ে থাকে না) পোর্টে মনিটরের পাওয়ার ক্যাবল লাগাতে পারেন। এরপর সিআরটি মনিটরের ভিজিএ কানেক্টরটি মাদারবোর্ডের ভিজিএ পোর্টে (চিত্র-২২) বা আলাদা গ্রাফিক্স কার্ড লাগানো থাকলে তার পেছন দিকের ভিজিএ পোর্টে লাগাতে হবে এবং দুই পাশের প্যাচযুক্ত স্ক্রুগুলো ভালোভাবে লাগিয়ে দিতে হবে। কোনো কারণে পোর্ট থেকে ক্যাবলটি খোলার দরকার হলে প্রথমে স্ক্রু দুটো খুলে তারপর টেনে ভিজিএ কানেক্টরটি খুলতে হবে। আর এলসিডি মনিটর লাগাতে হলে তার ডিভিআই কানেক্টর ডিভিআই পোর্টে লাগাতে হবে।

অডিও ইনপুট ও আউটপুট সংযোজন

স্পিকারের লাইন পিসির সাথে দেয়ার জন্য ক্যাসিংয়ের রিয়ার প্যানেলের বিল্ট-ইন সাউন্ড কার্ডের পোর্টগুলোয় স্পিকারের জ্যাক লাগাতে হবে। জ্যাক ও পোর্ট দুটোতেই রঙ করা থাকে, ফলে লাগানোয় কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। সবুজ জ্যাক সবুজ বা হলুদ পোর্টে ও কালো জ্যাক কালো পোর্টে লাগালেই অডিও আউট বা স্পিকারের লাইন দেয়ার কাজ হয়ে যাবে। এছাড়া গোলাপী রঙের পোর্টটি দেয়া হয় মাইক্রোফোন লাগানোর জন্য। যদি পোর্টগুলোতে রঙ করা না থাকে, তাহলে ছবি দিয়ে বোঝানো থাকে কোনটাতে কোন জ্যাক লাগবে। চিত্র ২০-এ বিল্ট-ইন সাউন্ড কার্ডের পোর্টগুলো দেখানো হয়েছে। তবে যখন আলাদা সাউন্ড কার্ড লাগানো হবে, তখন আর বিল্ট-ইনটি কাজ করবে না এবং সেক্ষেত্রে সেই সাউন্ড কার্ডের পেছনের পোর্টগুলোয় স্পিকারের জ্যাক লাগাতে হবে।



এছাড়া চিত্র-২০-এ প্যারালাল ও সিরিয়াল কমিউনিকেশন পোর্ট দেখা যাচ্ছে। এগুলো সম্পর্কেও না জানালেই নয়। প্যারালাল পোর্ট সাধারণত পুরনো প্রিন্টার ব্যবহার করার জন্য লাগে, কিন্তু নতুন প্রিন্টারগুলো ইউএসবি সাপোর্টেড হওয়ায় এই পোর্টের আর দরকার হয় না। তবু মাদারবোর্ড নির্মাতারা এই পোর্টটি পুরনো প্রিন্টারে ব্যবহার হতে পারে বিধায় এই পোর্ট সরবরাহ করে থাকে। সিরিয়াল পোর্ট আগে ব্যবহার করা হতো নেটওয়ার্ক কানেকশনের জন্য ও গেমিং কন্সোল ডিভাইসসমূহ সংযোজন করার জন্য। কিন্তু বর্তমানে ইথারনেট ও ইউএসবি পোর্ট এর জায়গা অনেক অংশে দখল করে নিয়েছে।

শেষ কথা

পিসি কেনার যাবতীয় পরামর্শ ও হার্ডওয়্যার সংযোজন করে কমপিউটার বানানোর খুঁটিনাটি তো জানা হলো। আশা করা যায়, এখন আপনারা নিজেই নিজের পিসি কিনতে পারবেন বা অন্যকে কিনতে সাহায্য করতে পারবেন এবং নিজ হাতেই হার্ডওয়্যার অ্যাসেম্বলিং করতে পারবেন। আগামী সংখ্যায় হার্ডডিস্ক পার্টিশন, বায়োস সেটআপ অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টলেশন ও প্রয়োজনীয় কিছু সফটওয়্যার ইনস্টলেশন করার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হবে।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান